সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক, নার্স ও কর্মচারীদের মারধর ও ভাঙচুর করার ঘটনায় থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের ইনচার্জ জ্যেষ্ঠ নার্স মর্জিনা খাতুন বাদি হয়ে শনিবার (৩ মে) দিনগত রাতে সাতক্ষীরা সদর থানায় এই মামলাটি করেন। মামলায় অজ্ঞাতপরিচয় ১১/১২ জন ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে।
এ ঘটনায় সাতক্ষীরা জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সভাপতি সোহেল আহমেদ মানিককে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। শনিবার (৩ এপ্রিল) বিকালে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব এ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত একটি পত্রে তাকে বহিষ্কার করা হয়।
এর আগে শনিবার (৩ মে) বেলা সাড়ে ১০টার দিকে সাতক্ষীরার সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে এই হামলার ঘটনা ঘটে। এ সময় দুজন চিকিৎসক, দুজন নার্সসহ সাতজন আহত হন।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, শাহিন হোসেন (২৫) নামের একজন গুরুতর জখম রোগী নিয়ে শনিবার (৩ মে) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে কয়েকজন জরুরি বিভাগে আসেন। ওই ব্যক্তিকে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক আক্তার মারুফ চিকিৎসা দিয়ে হাসপাতালের ওয়ার্ডে ভর্তি করে দেন। কিন্তু হাসপাতালে অন্তবিভাগে চিকিৎসককে না পেয়ে রোগীর স্বজনেরা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। পরে তাঁরা আবার জরুরি বিভাগে ফিরে এসে চিকিৎসক আক্তার মারুফের সঙ্গে তর্কবিতর্কে জড়িয়ে পড়েন। একপর্যায়ে ওই রোগীর স্বজনেরা জরুরি বিভাগের চিকিৎসক আক্তার মারুফ, তানভির রহমান, নার্স সাহানা পারভিন, মর্জিনা খাতুন, জরুরি বিভাগে কর্মরত ফরিদ আহমেদ, মাসুম হোসেন ও সমীরণকে মারধর করেন। এসময় তারা অকারণে জরুরি বিভাগের চেয়ার-টেবিলসহ অন্যান্য জিনিসপত্র ভাঙচুর করেন।
সাতক্ষীরা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শামিনুল হক জানান, সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের ইনচার্জ জ্যেষ্ঠ নার্স মর্জিনা খাতুন বাদি হয়ে অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে শনিবার (৩ মে) দিনগত রাতে থানায় একটি মামলা করেছেন। পুলিশ ভিডিও ফুটেজ দেখে হামলাকারীদের শনাক্ত করার চেষ্টা করেছে। রোববার (৪ মে) বিকাল ৪টা পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি।
প্রসঙ্গত, শনিবার (৩ মে) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে শাহিনুর নামের এক রোগী সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে চিকিৎসা নিয়ে ইনডোরে ভর্তি হন। সেখানে দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসককে না পেয়ে রোগীর স্বজনরা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। পরে তারা ফের জরুরী বিভাগে ফিরে এসে কর্তব্যরত স্টাফদের সঙ্গে তর্কবিতর্কে জড়ান। একপর্যায়ে জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সভাপতি সোহেল আহমেদ মানিকের নেতৃত্বে স্টাফদের ওপর হামলা চালিয়ে জরুরী বিভাগ ব্যাপক ভাংচুর করা হয়। এ সময় জরুরী বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসককেও মারপিট করা হয়। হামলার সময় হাসপাতালের চিকিৎসক ও কর্মচারীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
খুলনা গেজেট/এমএনএস